নিজস্ব প্রতিবেদন

May 8, 2019

জঞ্জালের জটে শহর

Updated: Aug 23, 2019

ডাক্তারের পরামর্শে মর্নিং ওয়াকে বেরিয়েছিলেন রাজকুমারবাবু৷বাঁধ রোড ধরে হাঁটছিলেনও বেশ৷কিন্তু মিউজিয়ামের কাছাকাছি আসতেই বিকট গন্ধে শরীরটা কেমন গুলিয়ে উঠল৷রাস্তার একধারে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে জঞ্জাল বোঝাই গাড়ি৷তার পাশেই রাস্তার ওপরে জঞ্জাল ছড়ানো ছেটানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে৷পাশ দিয়ে যাওয়াই দায়৷তবে শুধু যে বাঁধ রোডেরই এমন অবস্থা তা নয়, শহরের একাধিক রাস্তায় জঞ্জাল উপচে রাস্তায় নেমে এসেছে।

কিন্তু কেন এমন দশা আমাদের শহরটার?

আসলে একটা বাড়তে থাকা শহরের বড়ো সমস্যা হল বাড়তে থাকা জঞ্জাল৷আর ইংরেজবাজারের মতো বড়ো শহরে প্রতিদিন জন্ম নেওয়া টন টন জঞ্জাল ফেলার জায়গাটাই যদি না থাকে পুরসভার হাতে, তাহলে যা হবার তাই হচ্ছে৷ আস্তে আস্তে জঞ্জালের স্তূপে মুখ ঢাকছে শহরের৷

১৫০ বছরের পুরোনো এই শহরে আজও কোনো ভাগাড় গড়ে ওঠেনি৷শহরের জঞ্জাল কোথায় ফেলা যাবে, তা নিয়ে কার্যত নাকাল পুরসভা৷যেখানে সেখানে জঞ্জাল ফেলতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই তাড়া খেতে হচ্ছে পুরকর্মীদের৷কখনো মহদিপুরে বিএসএফের সঙ্গে বিবাদে জড়াতে হচ্ছে, আবার কখনো নিয়ন্ত্রিত বাজারের কাছে জঞ্জাল নামাতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়াতে হচ্ছে পুরকর্মীদের৷এ যেন এক লড়াইয়ে নেমেছেন পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের কর্মীরা৷

এই সমস্যা কবে মিটবে?

খুব শীঘ্রই ভাগাড় জট কাটিয়ে পুরসভা বেরিয়ে আসবে বলে বিশ্বাস পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষের৷তিনি বলেন, আমরা ভাগাড়ের জন্য নতুন জমির খোঁজ করছি৷

তবে পুরপ্রধানের কথায় এখনই ভুলছেন না শহরবাসী৷টোটোচালক নারাণ দাস তো বলেই ফেললেন, না আঁচালে বিশ্বাস নেই৷ আগে শহর সাফসুতরো করে দেখাক পুরসভা৷তারপর বুঝব পুরসভার সদিচ্ছা আছে৷

সঠিক উত্তর নেই পুরসভার কাছে৷তাহলে প্রতিদিন শহরে তৈরি হওয়া ১৯০ মেট্রিক টন জঞ্জাল কোথায় ফেলা হবে? পুরসভার বক্তব্য, ভাগাড় জট কাটবে শীঘ্রই৷কারণ ভাগাড়ের জন্য জমি দেখা হচ্ছে৷জমি মিললেই জঞ্জাল সাফ৷আপাতত সেই আশাতেই রইল শহরবাসী৷

শহরবাসীর কথা

নারাণ দাস, টোটোচালক

না আঁচালে বিশ্বাস নেই৷ আগে শহর সাফসুতরো করে দেখাক পুরসভা৷ তারপর বুঝব পুরসভার সদিচ্ছা আছে৷

পিঙ্কি সাহা, গৃহবধূ, বালুচরের বাসিন্দা

রোজ মকদুমপুরের বাজারে যাই৷ কিন্তু বাঁধ রোডের যা অবস্থা, দুর্গন্ধে যাওয়াই দায়৷ এখন তো ভাবছি অন্য রাস্তা দিয়ে যাব৷

সোনা সিং, সরকারি কর্মী

জঞ্জাল মাড়িয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া মুশকিল হয়ে গিয়েছে৷ পুরসভা যে কী করছে?

হীরা রাজপুত, ব্যবসায়ী

শহরের এই অবস্থা আগে ছিল না৷ এখন যেখানে সেখানে জঞ্জাল পড়ে থাকছে৷

অদিতি আচার্য ব্যানার্জি, গৃহবধূ

দূর রাস্তা দিয়ে যাব কী, একটু হাঁটতে বেরোব, তার যো নেই৷ উপচে পড়ছে নোংরা৷ বাঁধ রোডের ভালো পরিবেশটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷

ছবিঃ মিসবাহুল হক

#EnglishBazarMunicipality