আমাদের মালদা ডিজিট্যাল

Jul 1, 2019

অপসারিত বিজেপি সভাপতি, আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ইঙ্গিত

Updated: Nov 9, 2020

পদ থেকে অপসারণের পর দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করলেন বিজেপির বিদায়ি মালদা জেলা সভাপতি সঞ্জিৎ মিশ্র৷ আজ দলের জেলা কার্যালয়, শ্যামাপ্রসাদ ভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন৷ দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তিনি প্রয়োজনে আদালতে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছেন৷

উল্লেখ্য, গতকালই সঞ্জিৎ মিশ্র সহ ৮ জেলার সভাপতিকে অপসারণ করে বিজেপি৷ সেই মেমোতে স্বাক্ষর করেন দলের রাজ্য কমিটির অফিস সেক্রেটারি৷ সেই মেমোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সঞ্জিতবাবু৷ তিনি বলেন, বিজেপির গঠনতন্ত্রে অফিস সেক্রেটারি বলে কোনও পদ নেই৷ দলীয় দঠনতন্ত্রে কোনও রাজ্যে কোনও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী রাজ্য সভাপতি৷ তাঁর পরেই রয়েছেন জেলা সভাপতিরা৷ গত বছরের ২০ জুলাই রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তাঁকে মালদা জেলার দলীয় সভাপতি হিসাবে নিযুক্ত করেন৷ ২৩ জুলাই তিনি সেই দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷

সঞ্জিতবাবুর অভিযোগ, প্রথম থেকেই তাঁকে মেনে নিতে পারেননি দলের রাজ্য কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত চ্যাটার্জি৷ সুব্রতবাবুর বুথ সভাপতি হওয়ার যোগ্যতা না থাকলেও তিনি উপরতলার কয়েকজনকে ধরে সেই দায়িত্ব পান৷ প্রথম থেকেই তিনি তাঁর বিরোধিতা করে আসছেন৷ জেলা সভাপতি হিসাবে তিনি নতুন কমিটি গঠন করলেও সেই কমিটির অনুমোদন দিতে টালবাহানা করেন তিনি৷ নিজের পছন্দের লোকজনকে নতুন কমিটিতে রাখার জন্য সুব্রতবাবু তাঁকে চাপ দেন৷ তিনি গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানান৷ অবশেষে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে মাস তিনেক পর সেই কমিটি অনুমোদন পায়৷ এরপরেই সুব্রতবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেন৷ নিজের পেটোয়া লোকজনকে দিয়ে তাঁকে পদে পদে অপদস্থ করাতে শুরু করেন৷ হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভোটের ৪ দিন আগে তাঁকে নির্দেশ দেন, তিনি যেন হবিবপুরে না যান৷ তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সেকথা জানান৷ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি হবিবপুরে মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন৷ তার সুফল পেয়েছে দল৷ লোকসভা ভোটেও তিনি এই জেলায় দলকে একটি আসনে জিতিয়েছেন৷ দক্ষিণ মালদার প্রার্থী যদি দলের নির্দেশ মেনে কাজ করতেন তবে সেই আসনেও তাঁরা জিততেন৷ তবে এই কেন্দ্রে হার হবে নিশ্চিত ছিল কেন্দ্র ও রাজ্য কমিটি৷ কোনও কমিটিই এই আসনে গুরুত্ব দেয়নি৷ অথচ তিনি দুই কমিটিকেই বলে দিয়েছিলেন, একটু খাটলেই আসনটি তাঁরা দখল করবেন৷ এই কেন্দ্রের প্রার্থীকেও কেউ কন্ট্রোল করতে পারছিল না৷ তিনি নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করছিলেন৷ সেই কারণেই আসনটি তাঁদের খোয়াতে হয়েছে৷

সঞ্জিতবাবু বলেন, তিনি দলের ট্রেড ইউনিয়নের সর্বভারতীয় সভাপতি হিসাবে কাজ করেছেন৷ তাই দলের আটঘাঁট তাঁর জানা রয়েছে৷ এই নিয়েই তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিত্বের সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন সুব্রতবাবু৷ কিন্তু তিনিও এর শেষ দেখে ছাড়বেন৷ গতকাল তাঁকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ বলা হয়েছে, যে ৮ জনকে পদ থেকে সরানো হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে৷ রয়েছে আর্থিক দুর্নীতি ও অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ৷ তিনি দলকে চ্যালেঞ্জ করছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ দিতে হবে৷ তা না হলে তিনি কেন্দ্রীয় দপ্তরের সামনে ধরনায় বসবেন৷ প্রয়োজনে দলের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবেন৷ আপাতত তিনি ঠিক করেছেন, যতদিন না তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগের প্রমাণ মিলছে, ততদিন দলের কোনও কর্মসূচিতে তিনি অংশ নেবেন না৷ তবে দলও ছাড়বেন না৷