আমাদের মালদা ডিজিট্যাল
Apr 27, 2017
Updated: Feb 24, 2023
'হাত'-এর মুঠো আলগা হতে শুরু করেছিল সম্ভবত তখন থেকেই। কিন্তু নিঃশব্দে। হ্যাঁ , ১৯৮৪-র সহানুভূতির হাওয়ায় ভেসে দুই দফায় (পাঞ্জাব এবং অসমে পরে ভোট হয়েছিল) মোট ৪১৪ টি আসন পেয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকলেও সেই প্রথমবার রাজনৈতিক দল হিসাবে মাত্র দু'টি আসন লোকসভায় পা রেখেছিল বিজেপি। গোকুলে ধীরে ধীরে বাড়ছিল তারা। মাত্র পাঁচ বছর পরেই (১৯৮৯) সংসদে দুই থেকে ৮৫ হয়েছিল গেরুয়া দল। মোট ন'টি লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করে মাত্র দু'বার ছাড়া (২০০৪, ২০০৯) প্রতিবারই নিজেদের আসন বাড়িয়ে নিয়েছে তারা। আরেকটা লক্ষণীয় বিষয় হল দ্বাদশ লোকসভা (১৯৯৮) থেকেই (২০০৯ বাদ দিলে) প্রতিটি লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে ভোট শতাংশের বিচারেও রীতিমতো পাল্লা দিয়েছে বিজেপি।
দেশে গেরুয়া ছায়া দীর্ঘ হলেও রাজ্য রাঙানোর জন্য নজরে অন্য কিছু ফ্যাক্টর।
জাতীয় দল হিসাবে উঠে আসার পরেই একের পর এক রাজ্য দখলের উচ্চাকাঙ্ক্ষা সংবরণ করা যে-কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষেই কঠিন। বিজেপি'র ক্ষেত্রেও তাই। আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে কোথাও একক শক্তিতে কোথাও বা শরিক দলের হাত ধরে এই মুহূর্তে দেশের ২৯টির মধ্যে ১৭টি রাজ্যেই জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা'র (এনডিএ) সরকার।
কিন্তু লক্ষ করার মতো বিষয় হল এখন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র শরিক সংখ্যা ৪৬! কিন্তু সব শরিকের নাম বিজেপি'র বেশিরভাগ নেতা-নেত্রীরা বলতে পারা তো দূরের কথা জানেনও কিনা সন্দেহ। বিজেপি এবং তেলেগু দেশম ছাড়া আর কোনো শরিক দলেরই আসন সংখ্যা দুই অঙ্কের নয়। শরিকদের 'দুধে-ভাতে' করে সঙ্গে রেখে একচেটিয়া আধিপত্য নিয়েই যে চলতে চান মোদি-শাহ জুটি, শিবসেনা'র মতো 'পুরোনো এবং বিশ্বস্ত' শরিককেও দরজা দেখিয়ে দেওয়া তারই প্রমাণ।
এখন প্রবল কৌতূহল বিজেপি'র 'পূর্ব-দর্শন' নীতি নিয়ে। বিহারে পর্যুদস্ত হলেও উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে রক্তের স্বাদ পেয়ে এবার বাংলা-ওড়িশায় নজর গেরুয়া দলের। রাজ্য নেতৃ্ত্বের ওপর খুব বেশি ভরসা রাখছে না নয়াদিল্লির ১১, অশোক রোড। তাই ২০১৯ কে তাক করে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিটির জন্য পাঠানো হয়েছে একজন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সহ শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীকে। রামনবমীর অস্ত্র মিছিলই হোক বা সাম্প্রতিক দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা নির্বাচনের ফল - মানুষের ভিড় কিছুটা হলেও বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে বিজেপি'কে। কিন্তু বিজেপি'র মনে রাখা দরকার বাংলা উত্তরপ্রদেশ নয়, ওড়িশা নয়। এক বা একাধিক স্বচ্ছ-স্পষ্ট-সহিষ্ণু-স্থানীয় মুখ না পেলে এবং সম্প্রীতির বাতাবরণ নিশ্চিত করে উন্নয়নের সদর্থক বিকল্প নীতি নিয়ে না এগোলে বঙ্গ জয়ের লড়াই থেকে রণেভঙ্গ দিতে হবে দিল্লিশ্বর'কে।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন