আমাদের মালদা ডিজিট্যাল
Nov 29, 2018
Updated: Mar 22, 2023
বাংলা সহ প্রতিবেশী দুই রাজ্য বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে বহু মানুষ এই উরসের মেলায় আসেন। প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয় এখানে। সম্প্রীতির এই উৎসব ঘিরে মেলা ও কাওয়ালি গানের অনুষ্ঠানও হয়ে থাকে। কাওয়ালি গানের দুই শিল্পী উত্তরাখণ্ডের জুনেইদ সুলতানি ও দিল্লির মহম্মদ আরিফ দুদিন ধরে ওই উৎসব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। শীতবস্ত্র থেকে শুরু করে কাঠের আসবাবপত্র, সংসারে ব্যবহারের দৈনন্দিন সামগ্রী, খেলনা ও নানারকমের খাবারের পসরা নিয়ে বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা হাজির ছিলেন মেলা প্রাঙ্গণে।
উরস উদযাপন কমিটি সূত্র থেকে জানা যায়, ওই গ্রামের পাশ দিয়ে এক সময় বয়ে যেত গঙ্গার শাখা নদী। ওই নদীতে একসময় পালতোলা নৌকা চলাচল করত। নদীপথে ওই গ্রামে এসেছিলেন পীর সাহেব। ওই গ্রামে ছিল তাঁর চিল্লাখানা। এই চিল্লাখানায় ভক্তদের ধর্মের কথা শোনাতেন পীরবাবা। বহু মানুষ সমস্যার সমাধানে তাঁর কাছে ছুটে আসতেন।
কথিত আছে, একবার রাজা লক্ষ্মণ সেন সমস্যায় পড়ে নৌকায় চেপে বাংরুয়া গ্রামে পীরবাবার আশ্রয় নিয়েছিলেন।
সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে তাঁকে করমুক্ত ৫০০ বিঘা জমি দান করেছিলেন। একদিন পীরবাবা ওই স্থান ছেড়ে চলে যান। কেউ জানতেও পারেনি। তিনি আর তাঁর ওই চিল্লাখানায় ফিরেও আসেননি। পীরবাবার খিদমতকারীদের বংশধরেরা আজও ওই গ্রামে বসবাস করেন।
ওই কমিটির সূত্র থেকে আরও জানা যায়, ১৯৪৭ সাল থেকে উৎসবের সূচনা হয়। বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের ১০ ও ১১ তারিখে দুদিন সেখানে উরস উৎসব হয়ে থাকে। পীরবাবার চিল্লাখানায় সিন্নি দেওয়ার রীতি রয়েছে। উরস উদযাপন কমিটির অন্যতম সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, সেন আমলের পীর খিজির রহমতুল্লা আলে ইহের স্মরণে স্মরণে উদযাপিত হচ্ছে উৎসব। সেন রাজার দান করা জমিতেই অনুষ্ঠিত হয় উরস উৎসব।
বাংরুয়ায় গিয়েছিলেন মালদা জেলা পরিষদের শিশু ও নারী উন্নয়ন দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ মর্জিনা খাতুন। তিনি জানালেন, এই গ্রামে সেন আমলের পীর হজরত শাহ খিজির সাহেবের স্মরণে উরস উৎসব হচ্ছে। সিন্নি দিতে এসেছি। প্রচুর মানুষের সমাগম হয়েছে। গ্রামীণ মহিলারা এই মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন